২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

এবার নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকতে পারবেন এরশাদ!

হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ - সংগৃহীত

এবার তাহলে বোধোদয় হয়েছে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের। দশম জাতীয় সংসদের পর এরশাদের জাতীয় পার্টি সরকারের প্রতিনিধিত্ব করেছে পাশাপাশি বিরোধী দলের নাম ভূমিকায় ছিলেন। এনিয়ে খোদ জাতীয় পার্টিতেই ছিল সমালোচনা। অনেকে ঠাট্টা করে একে গৃহপালিত বিরোধী দল বলেও কটাক্ষ করেছেন।

এ নিয়ে প্রায়শ বিব্রত অবস্থায় পড়তে হয়েছে এরশাদকে। এমনকি সরকারে থাকা তার দলের মন্ত্রীরাও তার আদেশ-নির্দেশকে বৃদ্ধাঙ্গলি দেখাতেও পিছপা হননি।

তাই এবার সরকারে না থেকে শুধু বিরোধী দলে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এরশাদ। এতে হয়তো সুবিধাভোগী অংশটি ক্ষুব্ধ হতে পারে। তারা সরকারের মন্ত্রীসভায় যোগ দিয়ে ক্ষমতার স্বাদ নিতে চান। কিন্তু এরশাদ এবার হয়তো সে পথে হাটবেন না। তিনি শেষ বয়সে গৃহপালিত বিরোধীদলের তকমা নিতে চান না।

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়ামের বৈঠকে অনেক নেতাই সরকারে যোগ না দেয়ার বিষয়ে তাদের যৌক্তিকতা তুলে ধরেছেন। যদিও ঐ বৈঠকে এরশাদ বা রওশন এরশাদ কেউ উপস্থিত ছিলেন না। তবে ক্ষমতাসীনদের সাথে লিয়াঁজো রেখে চলা জাতীয় পার্টির একটি অংশ সরকারে প্রতিনিধিত্ব করতে চান পাশাপাশি বিরোধীদলেও ভূমিকা রাখতে চান।

শুক্রবার জাতীয় পার্টির প্রেস উইং থেকে এরশাদের স্বাক্ষরে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘পদাধিকার বলে’ তিনিই হবেন জাতীয় পার্টির পার্লামেন্টারি দলের সভাপতি এবং প্রধান বিরোধী দলীয় নেতা।

আর তার ছোট ভাই পার্টির কো চেয়ারম্যান জি এম কাদেরকে বিরোধী দলের উপ-নেতার দায়িত্ব দিয়েছেন এরশাদ। তবে এরশাদের স্ত্রী দশম সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদের ভূমিকা এবার কি হবে- সে বিষয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কিছু জানানো হয়নি।

দশম সংসদে একই সঙ্গে সরকার ও বিরোধী দলে থেকে ‘গৃহপালিত বিরোধী দল’ আখ্যা পাওয়া জাতীয় পার্টির কোনো সংসদ সদস্য এবার মন্ত্রিসভার অন্তর্ভুক্ত হবেন না বলে স্পষ্ট সিদ্ধান্ত এসেছে ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনি জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছেন।

দশম জাতীয় সংসদে মন্ত্রী পদমর্যাদায় বিরোধী দলের নেতা ছিলেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ।

আর মন্ত্রীসভায় দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ছিলেন পানিসম্পদ মন্ত্রী। বর্তমান মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা ছিলেন এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী ও মুজিবুল হক চুন্নু ছিলেন শ্রম প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে।

তাই স্বভাবত সরকারের নেক নজরে থাকা জাতীয় পার্টির নেতারা এরশাদের এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করতে পারেন। তারা দশম সংসদের উদাহরণ টেনে একই সাথে সরকার ও বিরোধী দলে থেকে যাওয়াকেই অগ্রাধিকার দিবেন।

অন্যদিকে সরকারও জাতীয় পার্টিকে নিজেদের কবজায় রাখতে যা যা কৌশল প্রয়োগ করার সবই করবেন বলে মনে হচ্ছে। কারণ জাতীয় পার্টির অনেক নেতাই সিদ্ধান্তের জন্য সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকেন। ক্ষমতাসীনদের সিদ্ধান্তকেই তারা বেশি প্রায়রিটি দেন বলে রাজনীতিতে প্রচলিত আছে।

 

মুহাম্মদ হাসান, ঢাকা ( লেখকের নিজস্ব অভিমত, এজন্য লেখকই দায়ী)

 


আরো সংবাদ



premium cement